বিক্ষোভের মুখে দক্ষিণ কোরিয়ায় সামরিক আইন বাতিল ঘোষণা

দক্ষিণ কোরিয়া প্রতিনিধিঃ

আইনপ্রণেতাদের কড়া বিরোধিতার মুখে সামরিক আইন জারির আদেশ প্রত্যাহারের ঘোষণা দিয়েছেন দক্ষিণ কোরিয়ার প্রেসিডেন্ট ইউন সুক-ইওল। পার্লামেন্টে ভোটাভুটির পর মঙ্গলবার তিনি জানান, সামরিক আইনের অবসানে পার্লামেন্টের সিদ্ধান্তকে তিনি সম্মান জানাবেন এবং মন্ত্রিসভার বৈঠকের পর তা আনুষ্ঠানিকভাবে বাতিল করা হবে।  

টেলিভিশনে জাতির উদ্দেশে দেওয়া ভাষণে প্রেসিডেন্ট বলেন, পার্লামেন্টের দাবির পরিপ্রেক্ষিতে সামরিক আইন প্রত্যাহারের সিদ্ধান্ত নিয়েছি। সামরিক বাহিনীকে আমি এ নির্দেশ দিয়েছি।

এর আগে মঙ্গলবার, প্রেসিডেন্ট ইউন ‘কমিউনিস্ট বাহিনীর’ হুমকি মোকাবিলার অজুহাতে জরুরি ভিত্তিতে সামরিক আইন জারি করেন। জাতির উদ্দেশে দেওয়া ভাষণে তিনি বলেন, উত্তর কোরিয়ার কমিউনিস্ট বাহিনীর হুমকি এবং রাষ্ট্রবিরোধী শক্তিগুলো দমন করতে সামরিক আইন জারি করছি। এই আইনের অধীনে সেনাপ্রধান জেনারেল পার্ক আন-সুককে দায়িত্ব দেওয়া হয়। রাজনৈতিক কর্মকাণ্ড সম্পূর্ণ নিষিদ্ধ ঘোষণা করা হয়, এবং পার্লামেন্ট ভবনসহ বিভিন্ন স্থাপনায় সেনা মোতায়েন করা হয়।

সামরিক আইন জারির পরপরই দক্ষিণ কোরিয়ার পার্লামেন্ট ঘিরে উত্তেজনা ছড়িয়ে পড়ে। পার্লামেন্টের বাইরে বিক্ষোভকারীরা প্রেসিডেন্টের পদত্যাগ এবং গ্রেপ্তারের দাবি জানিয়ে স্লোগান দিতে থাকেন।  

একপর্যায়ে সেনাবাহিনী পার্লামেন্ট ভবনে প্রবেশ করে এবং ভবনের ওপরে হেলিকপ্টার নামাতে দেখা যায়। এর মধ্যেই ১৯০ জন আইনপ্রণেতা নিরাপত্তা এড়িয়ে পার্লামেন্টে প্রবেশ করেন এবং সামরিক আইন বাতিলের পক্ষে ভোট দেন। সংবিধান অনুযায়ী, পার্লামেন্ট সদস্যদের সংখ্যাগরিষ্ঠ মতের ভিত্তিতে সামরিক আইন প্রত্যাহার করা সম্ভব। 

জানা যায়, মন্ত্রিসভা ইতোমধ্যেই সামরিক আইন প্রত্যাহারের প্রস্তাবে সম্মতি দিয়েছে। প্রেসিডেন্ট ইউন বলেন, পার্লামেন্টের সিদ্ধান্তকে আমি সম্মান জানাই এবং মন্ত্রিসভার বৈঠকের পর এই আইন বাতিল করা হবে।  

সামরিক আইন বাতিল হলেও দক্ষিণ কোরিয়ার রাজনীতিতে এ ঘটনায় অস্থিরতা দীর্ঘস্থায়ী হতে পারে বলে ধারণা বিশ্লেষকদের।