ফিলিস্তিনের মুসলিমদের ওপর হামলাকারী  ইসরাইলের বিষদাঁত উপড়ে ফেলতে হবে

# প্রতিবাদ-বিক্ষোভে উত্তাল খুলনা 

খুলনা ব্যুরো

স্বাধীন-সার্বভৌম ফিলিস্তিন আল-আকসা মুসলমানের প্রথম কেবলা। আল-আকসা মুসলমানের পুণ্য ভূমি। এটি মুসলিম উম্মাহর সম্পদ। এ সম্পদ রক্ষার দায়িত্ব শুধু ফিলিস্তিনিদের নয়, এ দায়িত্ব গোটা মুসলিম উম্মাহর। দীর্ঘ প্রায় আট দশক ধরে দখলদার ইসরাইল গাজা দখল করে হত্যাযজ্ঞ চালিয়ে আসছে। আর ইসরাইলকে সহায়তা করছে পশ্চিমাগোষ্ঠী। পশ্চিমারা ইসরাইলকে দিয়ে পুরো মধ্যপ্রাচ্য অশান্ত করে রেখেছে। স্বাধীন  রাষ্ট্রপ্রতিষ্ঠা ছাড়া ফিলিস্তিন সমস্যার কোনো সমাধান হবে না। সম্মিলিত প্রচেষ্টার মাধ্যমে দখলদার ও মধ্যপ্রাচ্যের বিষফোঁড়াখ্যাত ইসরাইলের বিষদাঁত উপড়ে ফেলতে হবে।

ফিলিস্তিনের মুসলিমদের ওপর ইসরাইলি আগ্রাসনের প্রতিবাদে শুক্রবার খুলনায় অনুষ্ঠিত বিক্ষোভ সমাবেশে এসব হুঁশিয়ারী উচ্চারণ করা হয়। খুলনা জেলা ইমাম পরিষদ বিকেলে নগরীর ডাকবাংলা চত্বরে এবং ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশ খুলনা  মহানগর ও জেলা শাখা একই সময়ে নগরীর বায়তুন নুর মসজিদ উত্তর গেটে আয়োজিত আলাদা বিক্ষোভ সমাবেশ করে। সমাবেশ শেষে বিক্ষোভ মিছিল ও শ্লোগানে শ্লোগানে গোটা নগরী উত্তাল হয়ে ওঠে। 

খুলনা জেলা ইমাম পরিষদ নেতৃবৃন্দ বলেন, ফিলিস্তানের জমিনে অবৈধ দখলদার ইসরাইলী উহুদীদের অবিলম্বে উচ্ছেদ করে ইসলামের পবিত্র ভূমি রক্ষার দায়িত্ব বিশ্ব মুসলিম উম্মাহ’র। বায়তুল আকসা রক্ষা দায়িত্ব শুধু নিরস্ত্র অসহায় ফিলিস্তিনিদের নয়, বিশ্বনবী (সাঃ) এঁর স্মৃতি ধন্য মুসলিম উম্মাহর প্রথম কিবলা রক্ষা করা প্রতিটি মুমিনের ঈমানী দায়িত্ব। তাই অবিলম্বে মুসলিম বিশ্বকে ঐক্যবদ্ধভাবে অবৈধ দখলদার সন্ত্রাসী গোষ্ঠিকে প্রতিহত করার আহবান জানিয়েছেন ওলামা মাশায়েখবৃন্দ। একই সাথে বাংলাদেশ সরকারকে অবিলম্বে রাষ্ট্রীয়ভাবে তীব্র প্রতিবাদ প্রকাশ করে অসহায় ফিলিস্তিনিদের সার্বিক সহায়তায় দেশপ্রেমিক সেনাবাহিনী প্রেরণের আহবান জানিয়েছেন খুলনা জেলা ইমাম পরিষদ। 

জেলা ইমাম পরিষদের সমাবেশে সভাপতিত্ব করেন হাফেজ মাওলানা মুশতাক আহমাদ। বক্তব্য রাখেন সাধারণ সম্পাদক মাওলানা গোলাম কিবরিয়া। উপস্থিত ছিলেন খুলনা জেলা ইমাম পরিষদের নেতা জয়েন্ট সেক্রেটারি নাসির উদ্দিন কাসেমী,  যুগ্ন সাধারণ সম্পাদক এ এফ এম নাজমুস সউদ, সহ-সাধারন‌ সম্পাদক মুফতী জিহাদুল ইসলাম, গোলামুর রহমান, আবুল কালাম আজাদ, কারামত আলী, আনোয়ারুল আযম, শফিকুল ইসলাম, মোল্লা মেরাজুল হক, মাসুম বিল্লাহ, রফিকুল ইসলাম, সিদ্দিকুর রহমান, হেকমত আলিম, জাফর সাদিক, ফয়সাল, রবিউল ইসলাম রাফে, মহসিন উদ্দিন, হাবিবুল্লাহ বিলালী, শফিকুর রহমান, আব্দুল্লাহ আল মামুন, গোলাম মাওলা, আব্দুল্লাহ, জিহাদুল হক, নূর সাঈদ জালালী, মাওলানা গোলজার হোসাইন, ইমদাদুল হক, অজিহর রহমান প্রমুখ।

ডাকবাংলো চত্বর থেকে বিশাল মিছিল লোয়ার যশোর, শিববাড়ী মোড় হয়ে নিউমার্কেট বায়তুন নূর জামে মসজিদ চত্বরে যেয়ে শেষ হয়। মিছিলে অবৈধ দখলদার ইসরাইল, সে দেশের প্রধানমন্ত্রী নেতানিয়াহু, তাদের সমার্থক দেয়ায় যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন ও ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীসহ ইসরাইল সমার্থকদের বিরুদ্ধে এবং মুসলিম উম্মাহর চেতনায় বিভিন্ন স্লোগানে প্রকম্পিত হয় রাজপথ। বিকেল থেকে বিভিন্ন মাসজিদ, সংগঠন ও এলাকা থেকে খন্ড খন্ড মিছিল সহকারে ইমাম পরিষদের সমাবেশে যোগ দেয় তৌহিদী জনতা।

অপরদিকে ইসলামী আন্দোলন আয়োজিত সমাবেশে বক্তারা  বলেন, বিশ্ববাসীর কাছে এ কথা স্পষ্ট হয়ে গেছে যে, ‘স্বাধীন-সার্বভৌম ফিলিস্তিন রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠা ছাড়া ফিলিস্তিন সমস্যার কোনো সমাধান হবে না’। তাই অবিলম্বে ফিলিস্তিনকে একটি স্বাধীন-সার্বভৌম রাষ্ট্র হিসেবে স্বীকৃতি দিতে হবে। একই সঙ্গে মধ্যপ্রাচ্যে স্থায়ীভাবে শান্তি প্রতিষ্ঠায় কার্যকর ভূমিকা পালন করার জন্য ওআইসি, জাতিসংঘ, শান্তিকামী বিশ্ববাসী ও মুসলিম দেশগুলোর প্রতি আহ্বান জানানো হয়। 

ফিলিস্তিনের গাজা উপত্যকায় অবৈধ দখলদার ইসরাইলি বাহিনীর বর্বর হামলায় হাজার হাজার মুক্তিকামী জনতার ওপর হত্যাকান্ডের তীব্র নিন্দা জানিয়ে বলেন, স্বাধীনতাকামী ফিলিস্তিনিদের ওপর হামলা নৃশংস, নির্দয়, নির্মম ও চরম অমানবিক। আমরা এ হামলার তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ জানাই। 

সন্ত্রাসী ইসরাইলের বর্বরোচিত হামলার ধিক্কার জানিয়ে বলা হয়, চলমান হামলা হামলা ও সহিংসতার জন্য ইসরাইল দায়ী। অবিলম্বে এ আগ্রাসন বন্ধ করতে হবে। ক্ষতিগ্রস্তদের মানবিক সাহায্য দেয়ার জন্য জাতিসংঘসহ সংশ্লিষ্ট সকলকে দ্রুত কার্যকর পদক্ষেপগ্রহণের আহ্বান জানানো হয়। 

সভাপতিত্ব করেন দলের খুলনা মহানগরীর ভারপ্রাপ্ত সভাপতি শেখ মোঃ নাসির উদ্দিন।  নগর সেক্রেটারি মুফতী ইমরান হুসাইন এর পরিচালনায় সমাবেশে প্রধান অতিথির বক্তব্য রাখেন ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশ খুলনা জেলা সভাপতি অধ্যাপক মাওলানা আব্দুল্লাহ ইমরান, বক্তব্য রাখেন মুফতি জিহাদুল ইসলাম, মুফতি মাহবুবুর রহমান, জেলা সেক্রেটারী হাফেজ আসাদুল্লাহ আল গালিব, দলের নগর নেতা শেখ হাসান ওবায়দুল করিম, নগর সহ-সভাপতি আবু তাহের, জেলা সহ-সভাপতি মাওলানা শায়খুল ইসলাম বিন হাসান, মাওলানা মুজিবুর রহমান, জয়েন্ট সেক্রেটারি মোহাম্মদ আবু গালিব, আলহাজ্ব জাহিদুল ইসলাম, অ্যাসিস্টেন্ট সেক্রেটারি মাওলানা দ্বীন ইসলাম, মুফতি আব্দুল জব্বার আজমি, সাংগঠনিক সম্পাদক মাওলানা সাইফুল ইসলাম, আব্দুস সাত্তার, প্রচার ও দাওয়াহ বিষয়ক সম্পাদক আব্দুল্লাহ আল নোমান, মাওলানা আশরাফুল ইসলাম, মুফতি হেলাল উদ্দিন, গাজী মিজানুর রহমান, শেখ হাসান ওসমান করীম, মোঃ মহিবুল্লাহ, মোঃ হুমায়ুন কবির, মাওলানা হাফিজুর রহমান, মাওলানা আসাদুল্লাহ হামিদী, আলহাজ্ব আবুল কাশেম, ডাক্তার মাওলানা আব্দুল্লাহ আল মামুন,  এ্যাডঃ কামাল হোসেন, মোহাম্মদ রেজাউল করিম, মুফতী ইলিয়াস মাঞ্জুরী, মাওলানা নাসিম উদ্দিন , বীরমুক্তিযোদ্ধা জিএম কিবরিয়া, মোহাম্মদ রওশন আলী, আলহাজ্ব সরোয়ার বন্দ, ডাক্তার রাকিবুল ইসলাম, আলহাজ্ব আব্দুস সালাম, হাফেজ আব্দুল লতিফ, মোল্লা রবিউল ইসলাম, এস এম শাহিন হোসেন, মাওলানা হারুনুর রশিদ, গাজী ফেরদাউস সুমন, মোঃ এনামুল হাসান, মুফতী মইনুল ইসলাম, নুরুল হুদা সাজু, মাষ্টার মঈনুদ্দিন ভুইঁয়া, মাওলানা আবু সাঈদ, মো ইসমাইল হোসেন, আলহাজ্ব মারুফ হোসেন, হাফেজ খায়রুল ইসলাম, ক্বারী জামাল হেসেন, কাজী তোফায়েল হোসেন, মাওলানা আব্দুল্লাহ আল মাসুম মোহাম্মদ নজরুল ইসলাম গাজী মুরাদ হাসান, আলফাত হোসেন লিটন, ইসমাইল হোসেন দুলাল, মোঃ কামরুজ্জামান, যুবনেতা মুফতী আ.হ.ম আব্দুর রহমান মিয়াজী, মুফতি ফজলুল হক ফাহাদ, ইমরান হোসেন মিয়া, আব্দুর রশিদ, এস কে নাজমুল হাসান, শিক্ষক নেতা মুফতি রবিউল ইসলাম রাফে, মোস্তফা বাঙালি, মাওলানা মাহবুবুল আলম, ছাত্র নেতা মোঃ মঈনউদ্দীন, আবু রায়হান, আব্দুল্লাহ আল মামুন, ফরহাদ মোল্লা, মাহাদী হাসান মুন্না, নাঈম ইসলাম, মোস্তফা আল গালিব, হাবিবুল্লাহ মেসবাহ প্রমুখ। 

সমাবেশ শেষে দলের নগর ভারপ্রাপ্ত সভাপতি শেখ মোঃ নাসির উদ্দিনের নেতৃত্বে একটি বিশাল মিছিল নগরীর নিউমার্কেট, বায়তুন নুর ,শিববাড়ী মোড়, ময়লাপোতা মোড়ে গিয়ে সংক্ষিপ্ত সমাবেশ ও মোনাজাতের মাধ্যমে শেষ হয়।