পাবনায় বালু মহল ও মাটি ব্যবস্থাপনায় শৃঙ্খলা ফেরাতে জেলা প্রশাসকের কঠোর পদক্ষেপ

আব্দুল্লাহ আল মোমিন
জেলা প্রতিনিধি পাবনা
বালু মহল ও মাটি ব্যবস্থাপনা আইন, ২০১০ বাস্তবায়নে পাবনার জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ মফিজুল ইসলাম জেলার প্রাকৃতিক সম্পদ রক্ষা এবং অবৈধ কার্যক্রম দমনে কঠোর পদক্ষেপ গ্রহণ করেছেন। জেলা প্রশাসনের সরাসরি তত্ত্বাবধানে গত ২০২৪ সালের সেপ্টেম্বর মাস থেকে ২০২৫ সালের এপ্রিল মাস পর্যন্ত পাবনা জেলাধীন বিভিন্ন উপজেলায় পরিচালিত হয়েছে ব্যাপক অভিযান। এই সময়ে ৪৫টি মোবাইল কোর্টের মাধ্যমে অবৈধ বালু উত্তোলন ও ফসলী জমি হতে মাটি কেটে বিক্রির বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে, যা জনমনে স্বস্তি এনেছে।
প্রাপ্ত তথ্য অনুযায়ী, এই আট মাসে উল্লিখিত আইনে মোট ৬৪টি মামলা দায়ের করা হয়েছে এবং ৬২ জন অবৈধ বালু উত্তোলনকারী ও মাটি ব্যবসায়ীর বিরুদ্ধে বিভিন্ন মেয়াদে শাস্তিমূলক ব্যবস্থা গ্রহণ করা হয়েছে। এর মধ্যে ২৪ জনকে কারাদণ্ড এবং অন্যান্যদের মোট ১৪ লক্ষ ৫৫ হাজার টাকা অর্থদণ্ড প্রদান করা হয়েছে। পাবনা সদর, বেড়া, সুজানগর, ঈশ্বরদী, ভাঙ্গুড়া এবং সাঁথিয়া উপজেলার বিভিন্ন বালু মহাল ও মাটি কাটার এলাকায় এই অভিযান পরিচালিত হয়। মাসভিত্তিক অভিযানে দেখা যায়, সেপ্টেম্বর মাসে ৭টি, অক্টোবর মাসে ৮টি, নভেম্বর মাসে ১১টি, ডিসেম্বর মাসে ৫টি, জানুয়ারিতে ২টি, ফেব্রুয়ারিতে ৮টি, মার্চে ৭টি এবং এপ্রিল মাসে ৭টি মোবাইল কোর্ট পরিচালনা করা হয়েছে।
এই সাহসী পদক্ষেপের বিষয়ে জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ মফিজুল ইসলাম স্পষ্ট ভাষায় বলেন, “এই অভিযান কেবল কিছু পরিসংখ্যানের সমষ্টি নয়, বরং এটি আমাদের পরিবেশ রক্ষা এবং আইনের শাসন প্রতিষ্ঠার দৃঢ় অঙ্গীকারের প্রতিচ্ছবি। পাবনার প্রাকৃতিক সম্পদ রক্ষায় জেলা প্রশাসন বদ্ধপরিকর এবং এই বিষয়ে কোনো প্রকার আপস করা হবে না।”
জেলা প্রশাসনের এই কার্যকর পদক্ষেপ বালু মহাল ও মাটি ব্যবস্থাপনায় দীর্ঘদিনের বিশৃঙ্খলা দূর করতে এবং অবৈধ কার্যকলাপ কঠোর হাতে দমন করতে তাৎপর্যপূর্ণ ভূমিকা রেখেছে। স্থানীয় জনগণ এবং পরিবেশ সচেতন মহল এই উদ্যোগকে আন্তরিকভাবে স্বাগত জানিয়েছেন। তাদের অভিমত, আইনের এই ধারাবাহিক প্রয়োগ এবং কার্যকর নজরদারি বজায় থাকলে ভবিষ্যতে কেউ আর পরিবেশ বিধ্বংসী অবৈধ কার্যক্রমে জড়িত হওয়ার সাহস পাবে না।
পাবনার সচেতন নাগরিক সমাজ আশা প্রকাশ করেন, জেলা প্রশাসন তাদের এই কঠোর পদক্ষেপ অব্যাহত থাকবে। পরিবেশ রক্ষা এবং আইনের শাসন প্রতিষ্ঠায় জেলা প্রশাসকের এই দৃঢ় পদক্ষেপ নিঃসন্দেহে প্রশংসার যোগ্য এবং সকলের সমর্থন প্রত্যাশী।