দেশকে অস্থিতিশীল করার পাঁয়তারা করলে তা ঐক্যবদ্ধভাবে পর্যবেক্ষন ও প্রতিহত করতে হবে — ঠাকুরগাঁওয়ে সারজিস আলম

মোঃ মজিবর রহমান শেখ,
ঠাকুরগাঁও জেলা প্রতিনিধিঃ

বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের কেন্দ্রীয় অন্যতম সমন্বয়ক ও জাতীয় নাগরিক কমিটির মুখ্য সংগঠক সারজিস আলম বলেছেন, সচিবালয়ে আগুনের বিষয়েটিতে ষড়যন্ত্র আছে এটা আমরা নিশ্চিত। তবে অন্য কোন চক্রান্ত আছে কিনা তা খতিয়ে দেখা হবে। কিভাবে দেশকে অস্থিতিশীল করার পাঁয়তারা চলছে সেটিও আমাদের ঐক্যবদ্ধভাবে পর্যবেণ করতে হবে এবং প্রতিহত করতে হবে। তিনি সম্প্রতি গতকাল বৃহস্পতিবার বিকেলে ঠাকুরগাঁও প্রেসকাব আধুনিক ভিআইপি হলরুমে জাতীয় নাগরিক কমিটির ঠাকুরগাঁও রাইজিং অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে উপরোক্ত কথা বলেন। জাতীয় নাগরিক কমিটি প্রসঙ্গে সারজিস বলেন, জাতীয় নাগরিক কমিটিকে আমরা মনে করি রাজনৈতিক একটি শক্তি। বাংলাদেশের এই অভ্যুত্থান পরবর্তি সময়ে জনগনের যে একটি চাহিদা তৈরী হয়েছে সেটি তারা তা অনুভব করে যে বাংলাদেশে নতুন কিছু দরকার। সে জায়গা থেকে এক বা একাধিক রাজনৈতিক দল আসতে পারে। কিন্তু জাতীয় নাগরিক কমিটি কোন রাজনৈতি দল নয়। আমরা জনগনের চাহিদা অনুযায়ী যে কাজটি করতে পারে, একাধিখ কাজের মধ্যে একটি কাজ হতে পারে লিডার তৈরী করা। ভাল একটা জেনারেশন তৈরী করতে জাতীয় নাগরিক কমিটি কাজ করবে। এ কমিটি দেশের বিভিন্ন ভাবে গড়ে উঠা যে প্লার্টফর্মগুলো রয়েছে তাদের যারা তরুন প্রজন্মের প্রতিনিধি তাদের জন্য কাজ করবে। আমরা মনে করি বাংলাদেশের বিভিন্ন শক্তি বিভিন্ন স্থানে রয়েছে কিন্তু একটি নির্দিষ্ট সু-সম্পন্ন প্লার্টফর্মে এসে দেশের জন্য কাজ করার যে সুযোগ এ সুযোগটি এতদিন ধরে হয়ে উঠেনি। অভ্যুত্থান পরবর্তী সময়ে এদেশের ছাত্র-জনতা, নাগরিক, এভাবে প্লার্টফর্মের মাধ্যমে ঐক্যবদ্ধ হয়েছে। আগামীতে জাতীয় নাগরিক কমিটি হবে ঐ প্লার্টফর্ম যেখান থেকে আমাদের লিডারশীপগুলো তৈরী হবে। লিডারশীপগুলো সেখানে পরিচর্যা করা হবে।
সচিবালয়ে ১শ মিটার দূরত্বে দুটি রুমে আগুন লাগার বিষয়ে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের নেতা ও জাতীয় নাগরিক কমিটির মুখ্য সংগঠক সারজিস আলম প্রশ্ন রেখে বলেন, সচিবালয়ের এত বড় একটা বিল্ডিং এক রুমে আগুন জ্বলছে আরেক রুমে আগুন জ্বলছে মধ্যবর্তী পার্থক্য ১শ মিটার। এটা কিভাবে সম্ভব? আগুন নির্দিষ্ট একটি জায়গা থেকে উৎপত্তি হয়ে ধীরে ধীরে ছড়িয়ে পড়বে, এটি হওয়ার কথা ছিল কিন্তু এমন ২টি রুমে আগুন জ্বলছে যে রুমগুলো হচ্ছে এ অভ্যুত্থানের সামনে থেকে নেতৃত্ব দেওয়া আমাদের সহযোদ্ধারা যারা এখন সরকারের প্রতিনিধিত্ব করছেন। আমাদের উপদেষ্টা আসিফ মাহমুদ এবং নাহিদ ইসলামের রুম কিভাবে জ্বলে পুড়ে শেষ হয়ে গেছে তা আপনারা দেখেছেন। ইতোমধ্যে সংবাদপত্রের মাধ্যমে আমরা জানতে পেরেছি সেখানে একটি কুকুরের মৃত দেহ পাওয়া গেছে। একটি কুকুর কিভাবে সচিবালয়ের ঐ রুমটিতে পাওয়া যায়? সারজিস আলম আরও বলেন, আমরা একটা জিনিস যদি ল্য করি আমাদের এই নিজেদের ভিতরে যৌক্তিক বিষয়গুলো নিয়ে অযৌক্তিক যে বিতর্ক বা মতপার্থক্য এগুলোর সুযোগ কিন্তু খুনি হাসিনার দোসরা নিচ্ছে। এখন আমরা যদি নিজেদের ভেতরে একটি যৌক্তিক সময় নিয়ে বিভাজন শুরু করি তাহলে এভাবে নানা অপকর্ম করার সুযোগ নিবে হাসিনার দোসররা। আমাদের জায়গা থেকে আমরা স্পষ্ট করে বলছি, সচিবালয়ের যে আমলারা ছিল এদের একটা বড় অংশ খুনি হাসিনাকে প্রধানমন্ত্রীর চেয়ারে বসিয়ে রেখেছিল। তাদের একটা বড় অংশ সকল অন্যায় অপকর্মকে বিগত ১৬ বছর ধরে বৈধতা দিয়েছে। এদের একটা বড় অংশ বাংলাদেশের সরকারি অফিসগুলোতে খুনি হাসিনার যে পারিবারিক তন্ত্র সেটি চালিয়েছে। ছাত্র জনতার গণঅভ্যুত্থানকে পুঁজি করে মামলা বাণিজ্য ও চাঁদাবাজির মাধ্যমে মানুষকে জিম্মি করা হচ্ছে। মামলায় নাম দেওয়ার সময় টাকা আবার মামলা থেকে নাম কাটার সময় টাকা নেওয়া হচ্ছে। বড় বড় ব্যবসায়ীদের বাসায় ডেকে নিয়ে চাঁদাবাজি করা হচ্ছে। এসবের জন্য এত মানুষ শহীদ হয়নি ৷
ঠাকুরগাঁও জাতীয় নাগরিক কমিটির আয়োজনে ঠাকুরগাঁও রাইজিং বিষয়ে আলোচনা সভা অনুষ্ঠানে ঠাকুরগাঁও জেলার বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের বিভিন্ন সমন্বয়ক, সহ-সমন্বয়কগণ উপস্থিত ছিলেন।