ঠাকুরগাওয়ের রুহিয়ায় হারিয়ে যাচ্ছে গ্রামীণ কৃষিতে গরু-মহিষের হাল চাষ

ঠাকুরগাওয়ের রুহিয়ায় হারিয়ে যাচ্ছে গ্রামীণ কৃষিতে গরু-মহিষের হাল চাষ

মোঃ আনোয়ার হোসেন, ঠাকুরগাঁও জেলা প্রতিনিধি: আধুনিক প্রযুক্তির অগ্রগতি ও ডিজিটাল উন্নয়নের ছোঁয়ায় ঠাকুরগাঁওয়ের রুহিয়ায় বিলুপ্তির পথে গ্রামীণ কৃষির ঐতিহ্যবাহী গরু-মহিষ দিয়ে হাল চাষ। একসময় এ অঞ্চলের কৃষকরা মাঠে গরু-মহিষ জুতে জমি চাষ করতেন, মাঠে কৃষকের শরীরের ঘাম, উঠ-রে-ব হাক লাঙল টানের শব্দ, নিজের হাতে লাগানো শস্যক্ষেত ছিল চিরচেনা দৃশ্য। কিন্তু কালের পরিবর্তনে সেই ঐতিহ্য আজ প্রায় বিলুপ্তির পথে। রুহিয়া থানাধীন ঢোলারহাট ইউনিয়নের প্রবীণ কৃষক আব্দুল হালিম বলেন, “আমার বাবা-চাচারা গরু দিয়ে জমি চাষ করতেন। আমি তাদের কাছ থেকে শিখেছি। এখন আমার ছেলে ট্রাক্টর ভাড়া করে জমি চাষ করে।” আরেক প্রবীণ কৃষক জানান, “আগে হাল চাষ ছিল একপ্রকার উৎসব, সবাই মিলে কাজ করতাম। এখন সেটা আর নেই।” আমাদের বংশের ভবিষ্যৎ প্রজন্মরা হয়তো গরু-মহিষের হাল কেমন তা বলতে পারবেনা।তরুণ কৃষকদের মতে, গরু-মহিষ পালন ব্যয়বহুল এবং সময় সাপেক্ষ হওয়ায় তারা যান্ত্রিক পদ্ধতির প্রতি ঝুঁকছেন। ঠাকুরগাঁও কৃষি অফিস জানিয়েছে, বর্তমানে কৃষিতে যান্ত্রিকীকরণের হার প্রায় ৯৯% হওয়ায় গরু-মহিষ নির্ভর হাল চাষ বিলুপ্তির পথে। তবে কিছু গবেষক ও সংস্কৃতিসচেতন মহলের মতে, হাল চাষ শুধু কৃষিপদ্ধতি নয়; এটি গ্রামীণ জীবনের একটি ঐতিহ্য, সংস্কৃতি ও শিকড়ের অংশ। তারা চান, সরকার প্রদর্শনী, কৃষিমেলা ও শিক্ষামূলক কার্যক্রমের মাধ্যমে এই ঐতিহ্যকে ধরে রাখার উদ্যোগ নিক। ঠাকুরগাঁও কৃষি কর্মকর্তা জানান, “যান্ত্রিকতা কৃষিকে গতিশীল করলেও ঐতিহ্যগত পদ্ধতিগুলো আমাদের সাংস্কৃতিক পরিচয়ের অংশ। এজন্য ঠাকুরগাঁওয়ের যাদুঘরে হাল চাষের সরঞ্জাম সংরক্ষণ করা হয়েছে, যাতে আগামী প্রজন্ম এর ইতিহাস জানতে পারে।”