চুয়াডাঙ্গা সদর হাসপাতালে ২৪ লাখ টাকার হদিস নেই: দুর্নীতি নিয়ে জনমনে ক্ষোভ

IMG-20250907-WA0024

এস এম রেদ্বোয়ান, বিশেষ প্রতিনিধি, চুয়াডাঙ্গা

চুয়াডাঙ্গা সদর হাসপাতালে পরিষ্কার-পরিচ্ছন্নতা ও কম্পিউটার আনুষঙ্গিক খাতে ২৪ লাখ টাকা খরচ দেখানো হলেও তার কোনো হদিস নেই। তিন মাস আগে বরাদ্দ পাওয়া এই টাকা তোলার পরও হাসপাতালের স্টোররুমে সামগ্রীর কোনো অস্তিত্ব নেই। ফলে জেলার স্বাস্থ্য খাতের এ দুর্নীতি নিয়ে জনমনে তীব্র ক্ষোভ ছড়িয়ে পড়েছে।

সূত্র জানায়, গত ১ জুন স্বাস্থ্য অধিদপ্তর থেকে সদর হাসপাতালের জন্য পরিষ্কার-পরিচ্ছন্নতা সামগ্রী ক্রয়ে ২০ লাখ এবং কম্পিউটার ও আনুষঙ্গিক খাতে ৪ লাখ টাকা বরাদ্দ দেওয়া হয়। নিয়ম অনুযায়ী ক্রয়কৃত উপকরণ স্টোরকিপারের মাধ্যমে সংরক্ষণের কথা থাকলেও তিন মাস পেরিয়ে গেলেও স্টোররুমে পাওয়া গেছে মাত্র চার কার্টুন জীবাণুনাশক। অথচ বরাদ্দের পুরো টাকা তোলা হয়েছে তত্ত্বাবধায়ক ডা. বিদ্যুৎ কুমার বিশ্বাসের স্বাক্ষরে।

হাসপাতালের প্রধান সহকারী আব্দুস সবুর বলেন, “তত্ত্বাবধায়ক স্যার নিজেই বরাদ্দের টাকা ও উপকরণ তদারকি করেন। তিনি নিয়ম মেনেই খরচ করেছেন বলে আমার ধারণা।”

কিন্তু বিষয়টি নিয়ে প্রশ্ন করলে তত্ত্বাবধায়ক ডা. বিদ্যুৎ কুমার বিশ্বাস প্রথমে চুপ থাকেন, পরে শুধু বলেন—“বিষয়টা দেখতে হবে, তারপর জানাতে পারবো।” তবে কবে ব্যয়ের হিসাব দেবেন তা তিনি স্পষ্ট করে জানাননি।

প্রকাশ্য বরাদ্দের টাকা গায়েব হয়ে যাওয়ায় সাধারণ মানুষ বিস্মিত ও ক্ষুব্ধ।
স্থানীয় নাগরিক কোটপাড়া রেদ্বোয়ান বলেন, “যদি প্রকাশ্য বরাদ্দের টাকাই গায়েব হয়ে যায়, তবে অন্য বরাদ্দের কী হয় তা ভেবে ভয় লাগে। বিষয়টির স্বচ্ছ তদন্ত হওয়া দরকার।”

চুয়াডাঙ্গা সিভিল সার্জন ডা. হাদী জিয়া উদ্দিন আহমেদ জানান, সদর হাসপাতালের আর্থিক কার্যক্রম তত্ত্বাবধায়ক নিজেই তদারকি করেন। “আমাদের সরাসরি এখতিয়ার নেই, তবে পরামর্শ দিতে পারি। বিষয়টি স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের মাধ্যমে দেখা উচিত।”

সচেতন মহল মনে করছে, স্বাস্থ্য খাতে প্রকাশ্য দুর্নীতি যদি এভাবে চাপা পড়ে যায়, তাহলে স্বাস্থ্যসেবা পুরোপুরি ধ্বংস হয়ে যাবে। তাই তারা দ্রুত তদন্ত করে দায়ীদের বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা নেওয়ার দাবি জানিয়েছে।

You may have missed