চার বছর পর পরশমনি হত্যাকান্ডের রহস্য উদঘাটন

হৃদয় রায় সজীব
ময়মনসিংহ ব্যুরো প্রতিনিধিঃ

নেত্রকোনায় সাড়ে ৪ বছর আগে চাঞ্চল্যকর ৯ বছরের শিশু পরশমনি হত্যাকাণ্ডের ক্লুলেস মামলার প্রকৃত রহস্য উদঘাটন করেছে নেত্রকোনা পুলিশ ব্যুরো অব ইনভেন্টিগেশন (পিবিআই)।

সোমবার (২৬ ডিসেম্বর ২০২২) সকালে পূর্ব কাটলীস্থ পিবিআই কার্যালয়ে এক প্রেস ব্রিফিংয়ে এ তথ্য জানান নেত্রকোনা পিবিআই-এর অতিরিক্ত পুলিশ সুপার মো. শাহীনুর কবির।

তিনি বলেন, জেলার মদন উপজেলার গোবিন্দশ্রী ইউনিয়নের কদমশ্রী গ্রামের হাবিবুর রহমানের বড় মেয়ে ৯ বছরের শিশু পরশমনি বিগত ২০১৮ সালের ১৪ এপ্রিল বিকালে খেলতে গিয়ে নিখোঁজ হয়। পরদিন ভোরে একই গ্রামের বুলবুল চৌধুরীর বাড়ির সামনের বিলের পাড় থেকে তার লাশ উদ্ধার করা হয়। এ ব্যাপারে থানায় ইউডি মামলা হয়।

পরবর্তীতে মৃতের মা শাহীনুর আক্তার বাদী হয়ে বিগত ২০১৮ সালের ১১ আগষ্ট অজ্ঞাতনামা ব্যক্তিদের আসামি করে একটি হত্যা মামলা দায়ের করেন। প্রথমে মদন থানা ১ বছরের বেশি সময় ধরে তদন্ত করে পরবর্তীতে নেত্রকোনা সিআইডি ১ বছরের অধিক সময় তদন্ত করেও হত্যাকাণ্ডের প্রকৃত রহস্য উদঘাটন করতে না পেরে ২০২০ সালে আদালতে চূড়ান্ত রিপোর্ট দাখিল করে। পরে বাদীর নারাজির প্রেক্ষিতে ২০২১ সালের ২৬ নভেম্বর আদালত নেত্রকোনা পিবিআইকে তদন্তভার প্রদান করেন।

পিবিআই পরিদর্শক মো. নূরুল ইসলাম খান মামলাটি তদন্তকালে তথ্য প্রযুক্তি ব্যবহার করে একই গ্রামের মৃত হামিদুর রহমানের ছেলে জোবায়েরকে (২৩) গত ২৪ ডিসেম্বর নেত্রকোনা জেলা শহর থেকে গ্রেফতার করে। প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে সে এই হত্যাকাণ্ডে জড়িত থাকার কথা স্বীকার করে। পরে ২৫ ডিসেম্বর তাকে ম্যাজিষ্ট্রেট আদালতে সোপর্দ করা হলে ১৬৪ ধারায় স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি প্রদান করে।

জোবায়ের আদালতকে জানায়, ঘটনার দিন বিকালে পরশমনিকে খেলার ছলে জনৈক জুয়েলের বাড়ির ঝোপের আড়ালে নিয়ে গিয়ে অনৈতিক কাজ করতে চাইলে সে চিৎকার শুরু করে এবং বাড়ির লোকজনকে জানানোর কথা বলে। তখন জোরে থাপ্পড় মারলে সে জ্ঞান হারিয়ে ফেলে। এ সময় ঘটনাটি প্রকাশ পাওয়ার শঙ্কায় গলায় চেপে ধরে শ্বাসরোধ করে তাকে হত্যা করা হয়। গভীর রাতে তার লাশ ঝোপের আড়াল থেকে বিলের পাড়ে ফেলে দেয়া হয়।

পরে বিজ্ঞ বিচারক জামিন নামঞ্জুর করে জোবায়েরকে জেল হাজতে প্রেরণের নির্দেশ প্রদান করেন।