খুলনায় কচি হত্যা মামলায় গ্রেনেড বাবুর যাবজ্জীবন, খালাস ৮

এস এম সাঈদুর রহমান সোহেল 

খুলনায় ব্যবসায়ী জাহাঙ্গীর হোসেন কচি হত্যার দায়ে রনি চৌধুরী ওরফে বাবু ওরফে গ্রেনেড বাবুকে যাবজ্জীবন কারাদণ্ড দিয়েছেন আদালত। একইসাথে তাকে ৫০ হাজার টাকা জরিমানা, অনাদায়ে আরও ১ বছরের সশ্রম কারাদণ্ড দেওয়া হয়েছে।

সোমবার (২৭ মার্চ) খুলনার অতিরিক্ত মহানগর দায়রা জজ আদালতের বিচারক এস এম আশিকুর রহমান এ রায় ঘোষণা করেন। 

অপরদিকে এ মামলার অপর ৮ আসামির বিরুদ্ধে রাষ্ট্রপক্ষ কোন অভিযোগ প্রমাণ করতে ব্যর্থ হওয়ায় তাদের বেকসুর খালাস দিয়েছেন। রায় ঘোষণার সময় অন্যান্য আসামিরা আদালতে থাকলেও গ্রেনেড বাবু পলাতক ছিলেন।

রায়ের বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন ওই আদালতের রাষ্ট্রপক্ষের আইনজীবী কাজী সাব্বির আহম্মদ।

খালাসপ্রাপ্ত অন্যান্য আসামিরা হল, সোহেল, সুমন শেখ ওরফে বোম সুমন, কালা রনি ওরফে হাসিবুর রহমান, কাজল ওরফে দাদা ওরফে হাবিবুর রহমান কাজল, রিয়াজ মির, সোহাগ, জাহিদ গাজী ও জিয়া গাজী।

মামলার সূত্রে জানা গেছে, জাহাঙ্গীর হোসেন কচি ট্যাংক রোডের বাসিন্দা হাকিম মো: ইলিয়াস হোসেনের ছেলে। ২০১০ সালের ১০ জুন সন্ধ্যায় কচিকে ফোন করে ডেকে নেয় দুর্বৃত্তরা। ফোন পেয়ে কচি ওই দিন সন্ধ্যা সাড়ে ৬ টার দিকে নগরীর শামসুর রহমান রোডের রাজিয়া মঞ্জিলের উত্তর পাশে আসলে ওৎ পেতে থাকা দুর্বৃত্তরা ধারালো অস্ত্র দিয়ে আঘাত করতে থাকে। একসময়ে মৃত ভেবে আসামিরা কচিকে ফেলে মোটরসাইকেলে করে পলিয়ে যায়। পরবর্তীতে খুলনা থানার পুলিশ ঘটনাস্থল থেকে কচিকে উদ্ধার করে খুলনা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নিলে কর্তব্যরত চিকিৎসক তাকে মৃত ঘোষণা করেন।

এ ব্যাপারে ঘটনার পরের দিন কচির বাবা ইলিয়াস হোসেন বাদি হয়ে রনি চৌধুরী বাবু ওরফে গ্রেনেড বাবুসহ ৬ জনের নাম উল্লেখসহ আরও কয়েকজনকে আসামি করে খুলনা সদর থানায় হত্যা মামলা দায়ের করেন। মামলার পর একই বছরের ২ নভেম্বর মামলার প্রধান আসামি গ্রেনেড বাবু পুলিশের হাতে গ্রেফতার হয়। এরপর সে খুলনা মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট স্বপন কুমারের আদালতে হত্যাকাণ্ডে নিজের দায় স্বীকার করে ১৬৪ ধারায় স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি প্রদান করে। সেখানে গ্রেনেড বাবু হত্যাকাণ্ডের কারণ হিসেবে উল্লেখ করে মাদকের টাকার ভাগাভাগিকে কেন্দ্র করে কচির সাথে অন্যান্য আসামিদের মত বিরোধ দেখা দেয়। সে কারণে তাকে হত্যা করা হয়। স্বীকারোক্তিতে বাবু কচিকে চা পাতি দিয়ে কোপানোর কথা স্বীকার করে।

মামলার তদন্ত কর্মকর্তা গোয়েন্দা শাখার এস আই আমিরুল ইসলাম ২০১১ সালের ৫ জুলাই গ্রেনেড বাবুসহ ৯ জনের বিরুদ্ধে আদালতে অভিযোগপত্র দাখিল করেন। মামলা চলাকালীন ২৬ জনের মধ্যে ১২ জন স্বাক্ষ্য প্রদান করেন।

You may have missed