খুলনায় অবাধ, সুষ্ঠু ও উৎসব মুখর পরিবেশে নির্বাচনের জন্য নিরাপত্তা জোরদার
# প্রেস ব্রিফিংয়ে কেএমপি কমিশনার
খুলনা ব্যুরো
দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন অবাধ, সুষ্ঠু ও উৎসব মুখর পরিবেশে অনুষ্ঠানের জন্য খুলনা মেট্রোপলিটন পুলিশ ব্যাপক নিরাপত্তামূলক ব্যবস্থা গ্রহণ করা হয়েছে বলে জানিয়েছেন কেএমপি কমিশনার মোঃ মোজাম্মেল হক। শুক্রবার বেলা সাড়ে ১১ টায় খুলনা সদর থানা চত্বরে অনুষ্ঠিত প্রেস ব্রিফিংয়ে তিনি এ তথ্য দেন। একই সঙ্গে ভোট গ্রহণের দিন এবং পূর্ব ও পরবর্তী দিনে নগরীর নিরাপত্তার বিষয়েও বিস্তারিত কথা বলেন তিনি। এ সময় কেএমপির উর্দ্ধতন কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন।
প্রেস ব্রিফিংয়ে পুলিশ কমিশনার বলেন,
আমরা বিগত ০৮ আগষ্ট থেকেই সন্ত্রাসী, নাশকতাকারী, অস্ত্রধারী, মাদক ব্যবসায়ী বা সমাজে প্রভাব প্রতিপত্তিশালী যারা নাশকতা সৃষ্টি করতে পারে তাদের বিরুদ্ধে অভিযান শুরু করি। তারই ধারাবাহিকতায় খুলনা মেট্রোপলিটন পুলিশ কর্তৃক অস্ত্রধারী শীর্ষ সন্ত্রাসী, জঙ্গি ও নাশকতাকারি, মাদক ব্যবসায়ী, ভূমিদস্যু, সাজাপ্রাপ্ত পরোয়ানাভুক্ত আসামীসহ বিভিন্ন মামলার আসামি গ্রেফতারের জন্য অভিযান অব্যাহত আছে। গত পহেলা আগস্ট থেকে ইতোমধ্যেই ১৮ টি আগ্নেয়াস্ত্র, ১৩২ রাউন্ড গুলি, ২৫ টি চোরাই মোটরসাইকেল, ককটেল, গান পাউডার, চোরাই স্বর্ণালঙ্কার সহ বিপুল পরিমাণ মাদকদ্রব্য উদ্ধার করতে সক্ষম হয়েছি।
গত ২৮ অক্টোবর নির্বাচন পূর্ববর্তী সময়ে ঢাকায় বিরোধী দল কর্তৃক পুলিশ হত্যাসহ পরবর্তীকালে বেশ কিছু হরতাল ও অবরো পালিত হয়। তারই ধারাবাহিকতায় বিরোধীদলের আহবানে খুলনা মহানগরীতে হরতাল, অবরোধ বা রাজনৈতিক কর্মসূচী অনুষ্ঠিত হলেও খুলনা মেট্রোপলিটন পুলিশ কর্তৃক পর্যাপ্ত নিরাপত্তামূলক ব্যবস্থা গ্রহণ করায় কোথাও কোন সন্ত্রাস ও নাশকতামূলক ঘটনা ঘটে নাই। ফলশ্রুতিতে অন্যান্য আট-দশটা দিনের মত যে সকল দিনে হরাতাল-অবরোধ ছিলো সে সময়ে স্বাভাবিক ভাবে যানবাহন, স্কুল-কলেজ, শিক্ষা প্রতিষ্ঠান, অফিস-আদালত সব খোলা ছিল। কতিপয় বিরোধীদল কর্তৃক নির্বাচন উপলক্ষে ০৬ জানুয়ারি ভোর ৬টা থেকে ০৮ জানুয়ারি ভোর ৬টা পর্যন্ত টানা ৪৮ ঘন্টার হরতাল ডেকেছে। আমরা দ্ব্যর্থহীন কণ্ঠে বলতে চাই, অন্যান্য দিনের মতই নির্বাচনের দিন পরিস্থিতি সম্পূর্ণ স্বাভাবিক থাকবে। আমরা জানি নির্বাচন সাধারণ জনগণের মধ্যে উৎসবের আমেজ ডেকে আনে। খুলনা মেট্রোপলিটন পুলিশের আওতাধীন এলাকায় লোকজন উৎসব মুখর পরিবেশে ভোট দান করবে। এক্ষেত্রে কোথাও কোন প্রতিবন্ধকতা থাকবে না। এ ব্যাপারে আমরা দ্ব্যর্থহীন কণ্ঠে বলতে চাই, যদি কেউ বাঁধা সৃষ্টি করতে চায় বা প্রতিবন্ধকতা সৃষ্টি করতে চায় অথবা নাশকতা সৃষ্টি করতে চায়, সেক্ষেত্রে পুলিশের পিকেট, মোবাইল টহল ও স্টাইকিং টিম প্রস্তুত আছে। আমরা তাদের বিরুদ্ধে দৃষ্টান্তমূলক ও আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণ করবো।
প্রেস ব্রিফিংয়ে আরো বলা হয়, নির্বাচন কমিশন কর্তৃক নির্বাচনের তফসিল ঘোষণার পর থেকে কোথাও কোন অঘটন ঘটে নাই। সকল প্রার্থীর জন্য এখানে সমতল ভূমি। বিরাজমান ছিলো এবং সবাই সাচ্ছন্দে নির্বাচনী প্রচারণা চালিয়েছে। খুলনা মহানগরীতে সর্বমোট ৩১০ টি কেন্দ্রে ভোট অনুষ্ঠিত হবে এবং নির্বাচন আরো সুষ্ঠু, সুন্দর এবং উৎসব মুখর পরিবেশে করার জন্য নির্বাচন কেন্দ্রে পর্যাপ্ত সংখ্যক সশস্ত্র পুলিশ, আনসারের পাশাপাশি উল্লেখযোগ্য পরিমান সেনাবাহিনী, বিজিবি ও র্যাব মোতায়েন থাকবে। অন্যান্য সকল সংস্থার সাথে সমন্বয় সাধনের মাধ্যমে নিঃছিদ্র নিরাপত্তার চাদরে মেট্রোপলিটন এলাকায় উৎসব মুখর পরিবেশে দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে।
এছাড়াও, খুলনা মেট্রোপলিটন পুলিশে প্রায় ৩ হাজারের মত পুলিশ সদস্য নির্বাচনের পূর্বে ও পরবর্তীতে দায়িত্ব পালন করবে এবং করছে। আমরা আশা করছি যে, নির্বাচনের পূর্বে হরতাল-অবরোধেও সার্বিক পরিস্থিতি স্বাভাবিক থাকবে। নির্বাচনের দিন সকলে উৎসব মুখর পরিবেশে দলে দলে ভোট দান করবে এবং নির্বাচনের পরবর্তীকালেও পরিবেশ অক্ষুন্ন থাকবে। নির্বাচনকে কেন্দ্র করে যারা হরতাল-অবরোধের মাধ্যমে বাঁধাগ্রস্থ করছে তাদের বিরুদ্ধে কঠোর আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে। নির্বাচনের দিন উৎসব মুখর পরিবেশ বজায় থাকবে। নির্বাচনের দিন কেউ যেন বিঘ্ন সৃষ্টি করতে না পারে এবং ভোট কেন্দ্রে কেউ যেন সন্ত্রাস, নাশকতা বা আধিপত্য বিস্তার করতে না পারে। নির্বাচনে জনগণের ভোটাধিকার প্রয়োগের সমান সুযোগ থাকবে, এটি পুলিশ নিশ্চিত করবে বলেও উল্লেখ করা হয়।