কোটা বিরোধী আন্দোলন যারা করছে তারা কারা?অথই নূরুল আমিন

মোহাম্মদ রুস্তম আলী
কিশোরগঞ্জ বিশেষ প্রতিনিধি:-

অনেকের মনে প্রশ্ন জাগতে পারে। কোটা বিরোধী আন্দোলন যারা করছে তারা কারা? অনেকেই বলছেন তারা সরকার বিরোধী। অনেকেই বলছেন কোনো একটা গুষ্ঠি তাদেরকে উস্কানি দিচ্ছে। আবার কেউ কেউ বলছেন । এটা তাদের অধিকার।
এখানে মেধাবী ছাত্র ছাত্রীরা কোটা বিরোধী আন্দোলন করতেই পারে। অনেক বীর মুক্তিযোদ্ধা কেউ পক্ষে কেউ বিপক্ষে মতামত দিয়ে যাচ্ছেন।

কোটার পক্ষে বিপক্ষে অবস্থান দেখে আমার কাছে মনে হচ্ছে। আমরা যেন কেউই গাছের গোড়ায় পানি ঢালতে নারাজ। একটি গণতন্ত্র দেশে সরকারের কাছে সকল নাগরিক প্রথমেই সমান অধিকার পাবে এটাই আসল কথা।
তারপর শ্রেণি ভেদে বিভিন্ন পদাধিকার মূল্যায়ন করবে রাষ্ট্র। এখানে মানা না মানা নিয়ে তর্ক বিতর্ক অবরোধ কোনোটাই হতে পারে না। জনগণের ভোটে নির্বাচিত সরকারের কাছে সবারই চাওয়ার ক্ষেত্রে সমান অধিকার আছে। কোটা বিরোধী আন্দোলন যারা করছে এটা অযৌক্তিক নয়। বীর মুক্তিযোদ্ধার সন্তানেরা রাষ্ট্রের কাছে অগ্রাধিকার পাবে এটাও সত্যি। তাতেও কারোর কোনো আপত্তি গ্রহণযোগ্য নয়। আজকে যারা কোটা বিরোধী আন্দোলন করছে। মুক্তিযোদ্ধার সন্তানদের সাথে প্রতিহিংসা করে এ আন্দোলন নয়।

তবে কথা থাকে যে সরকার যদি বিশেষ বিবেচনাধীন কোনো গুষ্ঠিকে বেশি প্রাধান্য দিতে চায়। সমস্যা নেই।
কোটা আন্দোলন নিয়ে কলাম লিখতে গিয়ে সেই বরযাত্রী গল্পটি মনে পরে গেলো।
বরের সাথে যারা যায় তাদেরকে বরযাত্রী বলা হয়ে থাকে। কন‍্যার বাড়ির লোকজনের কাছে বরযাত্রী যেমন, ছোট বড় ধনী গরিব সবাই সমান। তবে শর্ত থাকে যে, বরের সাথে যারা খেতে বসে তারা বরের ঘনিষ্ঠ আত্মীয়। যার ফলে বড় প্লেটে বর ও বরের ঘনিষ্ঠ জনদেরকে খাবার দেয়া হয়। এই বিষয় নিয়ে আজও অন‍্য কোনো বরযাত্রী কোনো ক্ষোভ প্রকাশ করেছে মর্মে শোনা যায়নি।

কোটা আন্দোলন নিয়ে সরকার যেন এক তরফা কিছু না করে। দেশের সকলের মন জয় করা একজন দেশপ্রেমিক রাষ্ট্র নায়কের কাজ। দেশের স্বাধীনতার তেপ্পান্ন বছরে বীর মুক্তিযোদ্ধা তালিকা নিয়ে রয়েছে নানারকম অভিযোগ নানারকম জল্পনা কল্পনা। আমাদের প্রকৃত বীর মুক্তিযোদ্ধা গণ স্বাধীনতা গামী যোদ্ধাই শুধু নন। বীর মুক্তিযোদ্ধাগণ সংগ্রামের সময় পাক বাহিনীর সাথে ছিল মোকাবেলা সম যুদ্ধ। জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানকে হত‍্যার পর দির্ঘ পঁচিশ বছর সম্পূর্ণ নিস্ক্রিয় জীবন যাপন করতে হয়েছে অনেকের। মৃত্যু ভয় উপেক্ষা করে চলতে হয়েছে। সরকারি ভাতা তো দূরের কথা বিভিন্ন জায়গায় মুক্তিযোদ্ধা পরিচয় দেয়া যেত না পযর্ন্ত।

সে যাক। এগুলো ইতিহাস সবারই জানা। আজকের লেখাটির মুল উদ্দেশ্য হলো আমরা বীর মুক্তিযোদ্ধা তালিকা পেয়েছি। যা গেজেট আকারে ফাইল বন্দি আছে মুক্তিযোদ্ধা মন্ত্রণালয়ে। আমার দাবী সরকারের পক্ষ থেকে মুক্তিযোদ্ধা মন্ত্রণালয়ের মাধ‍্যমে আমরা “মুক্তিযোদ্ধার সন্তান” নামে সম্পূর্ণ জীবনবৃত্তান্ত সহ জেলা ভিত্তিক পরিচয় গাইড প্রকাশ করা হোক। গাইড প্রকাশ করে মুক্তিযোদ্ধা সন্তানদের জন‍্য রাষ্ট্রী বহবিদ সুযোগ সুবিধা মুক্তিযোদ্ধা মন্ত্রণালয় থেকে দেয়া হোক। তাতে জনগণের সমস্যা নেই।
আজকের কোটা বিরোধীদের এ নিয়ে কোনো সমস্যা নেই বলে আমি মনে করি। তবে চাকরির ক্ষেত্রে মেধা আগে এটা শুধু আজকের জন্য নয়। ভবিষ্যত প্রজন্মর জন‍্য ও মঙ্গলজনক।

You may have missed