কানাইঘাটে আসক ফাউন্ডেশনের ব্যতিক্রমী নববর্ষ উদযাপন : কৃষির ঐতিহ্য তুলে ধরল “আনন্দ ফটোটেশন”

রাব্বির হাসনাত ইমন কানাইঘাট (সিলেট):

বাংলা নববর্ষ মানেই নতুন স্বপ্ন, নতুন প্রত্যাশা। এদিনটিকে কেন্দ্র করে সারাদেশে যখন নানা রকম সাংস্কৃতিক আয়োজন ও উৎসব চলছে, ঠিক তখনই আন্তর্জাতিক মানবাধিকার সংস্থা, আইন সহায়তা কেন্দ্র (আসক) ফাউন্ডেশন-এর কানাইঘাট উপজেলা শাখা এক ব্যতিক্রমী উদ্যোগ গ্রহণ করেছে।

নববর্ষ উপলক্ষে তারা আয়োজন করেছে “আনন্দ ফটোটেশন” শিরোনামে এক বিশেষ প্রদর্শনী। যেখানে আধুনিকতার ছোঁয়ার মাঝে হারিয়ে যাওয়া গ্রামীণ কৃষি ইতিহাস ও ঐতিহ্য তুলে ধরা হয়েছে। কানাইঘাট বাজার এলাকায় আয়োজিত এই ব্যতিক্রমী আয়োজন ইতোমধ্যে স্থানীয়দের মাঝে ব্যাপক আগ্রহ ও প্রশংসা কুড়িয়েছে।

অনুষ্ঠানে প্রদর্শন করা হয় হালের গরুর জোয়াল, ধান মাপার বাঁশের টুকরি, মাছ ধরার চাঁই, টাকি, ডালা, কুড়া ইত্যাদি কৃষি ও মৎস্যপালনের ঐতিহ্যবাহী সরঞ্জাম। প্রদর্শনীতে গ্রামের প্রবীণ কৃষকরাও অংশগ্রহণ করেন, যারা নিজেদের হাতে তৈরি এসব যন্ত্রপাতি নিয়ে উপস্থিত হয়ে গ্রামীণ জীবনের চিত্র আরও জীবন্ত করে তোলেন।

অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন আসক ফাউন্ডেশন কানাইঘাট উপজেলা শাখার সম্মানিত উপদেষ্টা আবুল বাশার, উপদেষ্টা মো: আব্দুল্লা, কার্যনির্বাহী কমিটির সভাপতি মো: বুরহান উদ্দীন, সাধারণ সম্পাদক মো: ফখরুল ইসলাম, প্রচার সম্পাদক আদিলুর রহমান, সদস্য তুহেল, ইমন, বদরুল ইসলাম, সাইফুল আলম প্রমুখ।

এছাড়াও স্থানীয় বিশিষ্ট ব্যবসায়ী আব্দুল কুদ্দুস, জাতীয় বিপ্লবী পরিষদের কেন্দ্রীয় কমিটির সদস্য কাওছার আহমদ, ফোকাস স্টুডিওর ব্যবসায়ী শাকিল আহমদ, আসাদুর রহমান, মুহিবুর রহমানসহ অনেকে অনুষ্ঠানে যোগ দেন।

অনুষ্ঠানের শুরুতে অতিথিবৃন্দ শুভ নববর্ষের শুভেচ্ছা জানিয়ে বলেন,
“পুরোনো সব কষ্ট ভুলে নতুন করে জীবন শুরু করাই আমাদের মূল লক্ষ্য। নতুন বছরের প্রথম দিনটিতে আমরা চেয়েছি গ্রামবাংলার ঐতিহ্যকে তুলে ধরে নতুন প্রজন্মকে আমাদের শিকড়ের সঙ্গে পরিচয় করিয়ে দিতে।”

তারা আরও জানান,
“বর্তমান প্রজন্ম দিন দিন গ্রামীণ ঐতিহ্য থেকে দূরে সরে যাচ্ছে। তাই এই আয়োজনের মাধ্যমে তাদের জানানো হলো, কীভাবে তাদের পূর্বপুরুষেরা কৃষি, মৎস্য এবং গ্রামীণ জীবনের বিভিন্ন কার্যক্রম পরিচালনা করতেন।”

পুরো আয়োজনে ছিল প্রাণের স্পন্দন, ছিল স্মৃতির হাতছানি। ছবির ফ্রেমে বাঁধা পড়ে রইল বাংলার ঐতিহ্যবাহী কৃষি জীবনের কিছু অমূল্য মুহূর্ত।

উপস্থিত দর্শনার্থীরা এমন আয়োজনের জন্য আয়োজক সংস্থাকে ধন্যবাদ জানিয়ে বলেন,
“এ ধরণের আয়োজন আমাদের হারিয়ে যেতে বসা ইতিহাস ও ঐতিহ্যকে মনে করিয়ে দেয়। এটি শুধু একটি প্রদর্শনী নয়, এটি আমাদের শেকড়ে ফেরার আহ্বান।”

দিনব্যাপী এই আয়োজনে উৎসবমুখর পরিবেশে সবাই বাংলা নববর্ষ ১৪৩২-এর প্রথম দিন উদযাপন করেন।