আযম খান কমার্স কলেজের পুরতান মালামাল বিক্রি করলেন ছাত্রলীগ নেতা, তদন্ত কমিটি গঠন


খুলনা ব্যুরো :
খুলনা সরকারী আযম খান কমার্স কলেজের পুরাতন মালামাল বিক্রয়ের অভিযোগ উঠেছে মহানগর ছাত্রলীগের সাংগঠনিক সম্পাদক বায়েজীদ সিনার বিরুদ্ধে। কলেজের অভ্যন্তরের একটি টিনশেড ঘরে রক্ষিত কলেজের পুরাতন ভবনের চেয়ার টেবিল, টিন ও লোহার রড-এঙ্গেলসহ বিভিন্ন মালামাল বিক্রি করে নিয়েছে। এ নিয়ে কলেজের শিক্ষক-কর্মচারী ও শিক্ষার্থীদের মধ্যে তীব্র ক্ষোভের সৃষ্টি হয়েছে। তবে মহানগর ছাত্রলীগ নেতৃবৃন্দ এ অভিযোগের বিষয়ে তদন্ত কমিটি গঠন করেছেন।
কলেজের শিক্ষক ও শিক্ষার্থীদের সূত্রে জানা গেছে, খুলনা সরকারী আযম খান কমার্স কলেজে সম্প্রতি কিছু সংস্কার কাজের টেন্ডার করা হয়। কলেজের ভিতরে মাঠের কোনার দিকে একটি টিনশেডে রাখা পুরাতন ভবনের চেয়ার টেবিল, টিন ও লোহার রড-এঙ্গেলসহ বিভিন্ন মালামাল রাখা ছিল। ঠিকাদারদের কাজের সুবিধার্থে এসকল পুরাতন মালামাল সরিয়ে টিনশেডটি খালি করার জন্য কলেজের অধ্যক্ষ কার্ত্তিক চন্দ্র মন্ডল শিক্ষক মো. সাইফুল ইসলামকে কাজের তদারকি ও দায়িত্ব প্রদান করেন। গত সোমবার (২৯ এপ্রিল) দুপুরে কলেজের ছাত্র ও মহানগর ছাত্রলীগের সাংগঠনিক সম্পাদক বায়েজীদ সিনার নেতৃত্বে কলেজের শিক্ষক মো. সাইফুল ইসলামে সহযোগীতায় টিনশেডে রক্ষিত পুরতান মালামাল কোন টেন্ডার ছাড়াই বিক্রি করে দেয়া হয়। এসময়ে কলেজের শিক্ষক ও কর্মচারী বাধা দিলে তাদেরকে হুমকি-ধামকি দেয়া হয় বলে অভিযোগ রয়েছে। এ ঘটনায় কলেজের শিক্ষক-কর্মচারী ও শিক্ষার্থীদের মধ্যে ক্ষোভের সৃষ্টি হওয়ায় কেউ কেউ বিষয়টি কলেজের অধ্যক্ষকে অভিহিত করেন। পরে কলেজ অধ্যক্ষের নির্দেশে শিক্ষকরা ঘটনার খোঁজখবর নেন। তবে কলেজের পক্ষ থেকে কোন আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণ করা হয়নি।
এদিকে সরকারী আযম খান কলেজের পুরাতন মালামাল ছাত্রলীগ নেতার নেতৃত্বে বিক্রির ঘটনা জানাজানি হলে মহানগর ছাত্রলীগের নেতাদের মধ্যে ক্ষোভের সৃষ্টি হয়। পরে ছাত্রলীগ নেতৃবৃন্দ এ ঘটনার সত্যতা জানতে তদন্ত কমিটি গঠন করেছেন।
সরকারি আযম খান কমার্স কলেজের মেরামত কাজের তদারকি দায়িত্বপ্রাপ্ত শিক্ষক মো. সাইফুল ইসলাম জানান, কলেজের পুরাতন ভবনের ও ক্লাসরুমের অকেজো চেয়ার টেবিলসহ বিভিন্ন মালামাল ছিলো। এরমধ্যে রড, এঙ্গেল, জানালার গ্রীলসহ লোহার মালামাল সংরক্ষিত আছে। তবে অকেজো কিছু চেয়ার টেবিলের মালামাল ছাত্ররা বিক্রয় করে চা খেয়েছে। তবে সরকারী প্রতিষ্ঠানের মালামাল বিনা টেন্ডারে বিক্রয় করা যায় কিনা এ বিষয়ে তিনি কোন মন্তব্য করেননি।
সরকারি আযম খান কমার্স কলেজের অধ্যক্ষ কার্ত্তিক চন্দ্র মন্ডল জানান, কলেজের ভিতরে মাঠের কোনার দিকে একটি টিনশেডে রাখা পুরাতন ভবনের চেয়ার টেবিল, টিন ও লোহার রড-এঙ্গেলসহ বিভিন্ন মালামাল রাখা ছিল। ঠিকাদারদের কাজের সুবিধার্থে এসকল পুরাতন মালামাল সরিয়ে টিনশেডটি খালি করার জন্য কলেজের অধ্যক্ষ কার্ত্তিক চন্দ্র মন্ডল শিক্ষক মো. সাইফুল ইসলামকে কাজের তদারকি ও দায়িত্ব প্রদান করা হয়। তবে কোন মালামাল বিক্রয় করার দায়িত্ব দেয়া হয়নি। কারণ সরকারি প্রতিষ্ঠানের মালামাল টেন্ডার ব্যতীত বিক্রয় করার নিয়ম নেই। যারা বিক্রি করেছে এটি তাদের দায়িত্ব। পুরাতন মালামাল সরানো ছাড়া অন্যকোন দায়িত্ব কাউকে দেয়া হয়নি। আমার অজান্তে তারা কি করেছে সে বিষয়ে আমি অবগত নই।
এ বিষয়ে কলেজের ছাত্র ও মহানগর ছাত্রলীগের সাংগঠনিক সম্পাদক বায়েজীদ সিনা জানান, কলেজের কোন মালামাল বিক্রির সাথে সে জড়িত নয়। তার সুনাম নষ্ট করতে একটি চক্র পরিকল্পিতভাবে তার বিরুদ্ধে এ কুৎসা রটাচ্ছে। সে এই ঘটনায় দোষী নয় বলে দাবি করেন।
মহানগর ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক এস এম আসাদুজ্জামান রাসেল জানান, সরকারী আযম খান কমার্স কলেজের কিছু পুরাতন মালামাল বিক্রয়ের বিষয়ে ছাত্রলীগ নেতার সংশ্লিষ্টতার বিষয়ে শুনেছি। ঘটনার সত্যতা জানতে মহানগর ছাত্রলীগের পক্ষ থেকে একটি তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়েছে। তদন্তে ঘটনার সাথে ছাত্রলীগ নেতার সংশ্লিষ্টতা পাওয়া গেলে তার বিরুদ্ধে সাংগঠনিক ব্যবস্থা নেয়া হবে বলে জানান তিনি। ##